Thursday, March 29, 2007

বুদ্ধিমানের জবানবন্দী-



সাপ্তাহিক ২০০০ এর এবারের ইস্যুটাতে ডা: এম এ হাসানের সাক্ষাৎকার পড়লাম মাত্রই। এম এ হাসানকে চিনেন না? চেনার কথাও না অবশ্য- উনি বোকা সোকা মানুষ, ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ান, সেই কর্মের পরিচিতি হিসাবে আবার রাশভারী একটা পদবীও দখল করে নিয়েছেন- সেটা কি? সেটা হলো- আহবায়ক, ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি। এবারে কি কিছুটা বুঝা গেলো? আরেকটু বুঝিয়ে বলি তাহলে, ৭১ এ পাকি সেনা ও রাজাকাররা এ দেশে নির্বিচারে যে গণহত্যা চালিয়েছিলো, উনি সেটার বিচার চান। সেই বিচারের জন্যে প্রমাণ খুঁজতে গিয়ে উনি সারা দেশে সেই হত্যালীলার চিহ্ণ খুঁজে বেড়াচ্ছেন। তিনি জানালেন, সারা দেশে বধ্যভূমি রয়েছে পাঁচ হাজারের মতন, শনাক্ত করা গেছে ৯২০ টি। ৯৯ সাল থেকে শুরু করেছিলেন, কাজ এখনো চলছে, তবে সেটাও মৃতপ্রায়।
না, উৎসাহের অভাব ঘটেনি, আর্থিক টানাটানিই মুল কারণ। কোন সরকার কখনো তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসে নি, কেউ কোন আর্থিক সাহায্যও করেন নি।

করবে কেন? আমাদের কি আর কাজ নেই? এম এ হাসান না হয় পাগল কিসিমের মানুষ, আমরা তো নই! এত বছরের পুরোনো ইতিহাস ঘাটায় আমাদের তাই উৎসাহ নেই। কানের পাশ থেকে যখন ঘাতকদের পরবর্তী প্রজন্ম খলখলিয়ে হাসি দিয়ে বলে, প্রমাণ কই, প্রমাণ? বুকের ক্ষতটারেতো আর বাইরে টেনে এনে দেখানো যায় না, আমরাও তাই অন্ধকারে হাতড়ে হাতড়ে মরি। কিন্তু প্রমাণ পাই না।

থাক, দরকারই বা কি? এই তো বেশ ভালো আছি। বেঁচে আছি, প্রতিদিন রুটি-গোশত খাচ্ছি। ডা: এম এ হাসান, আপনিও প্লিজ এইবারে অফ যান। দয়া করে পুরোনো জিনিস নিয়ে আর টানাটানি করবেন না। সিংগাপুর এয়ারপোর্টে পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্খার লোকেরা আপনার টিকেট ছিড়ে ফেলেছিলো? বেশ করেছে। আমাদের সরকারী গোয়েন্দা বাহিনী আপনার ফোন ট্যাপ করে, সারাক্ষণ অনুসরন করে আপনার গাড়ি, নানারকম হুমকি ধামকি দেয়। দেয়াই তো উচিৎ। কি দরকার এসবের বলুন তো?

যথেষ্ঠ করেছেন। আর কিছুদিন অপেক্ষা করুন। আপনাকে আমরা নিশ্চয়ই একদিন মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করবো। ৯২০ টি বধ্যভূমির হাহাকার বুকে নিয়ে আপনি যখন ঘুমিয়ে থাকবেন, আমরা তখন সভা সেমিনারে গিয়ে স্মৃতিচারণ করবো, ডা: এম এ হাসান, আহা, বড় ভালো লোক ছিলেন, আর ভীষন বোকা, আমাদের শহীদ পিতাদের কবর খুঁজতে চেয়েছিলেন।
আহা, বেচারা!

Wednesday, March 28, 2007

প্রজন্মের ইতিহাস পাঠ-চর্চা এবং রাজনীতি

হয়তো নিয়মটাই এমন - সবাই নিজের একটি আইডেন্টিটি খুঁজে। একাত্তরে যুদ্ধ করা মানুষরা আমাদের সামনে এক উজ্জ্বল তারকাপুঞ্জ! একজন মুক্তিযোদ্ধার হাত ছুঁয়ে টের পাই নিজের ভেতরে রক্তের তাপীয় বুদবুদ। কিংবা আরো পরে কিছু মুখ এসে বিষ্ময় জাগিয়ে যায়। নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের গমগমে কবিতার পংক্তিমালা আনে গণতন্ত্রের বাতাস। বুঝি - তারা সবাই একটি প্রজন্মের উত্তরসূরী। এরকম প্রতিটি প্রজন্ম এগিয়ে যায় সামনে নির্দিষ্ট লক্ষ্যের দিকে। প্রেরণা দেয় ইতিহাস, প্রেরণা দেয় রাজনীতি।

সময়ের দাবিতে প্রতিবাদী হাতগুলো জড়ো হয় সুন্দরের শপথে। তবুও ইদানিং কেমন জানি দলছুট মনে হয়। কৈশোর উত্তীর্ণ যৌবনে রাজনীতির নিষিদ্ধ দীক্ষা দেন গুরুজনেরা। কিশোর কিশোর ভাব নিয়ে কলেজে ভর্তি হই। বাবা-মা খুঁজে বের করেন - 'রাজনীতি ও ধুমপানমুক্ত কলেজ'। প্রতিনিয়ত উপদেশ পাই- কী কী থেকে মুক্ত থাকতে হবে। রাজনীতির মতো 'খারাপ জিনিস' থেকে দূরে থাকি, মাঝে দুয়েকবার সিগারেটে ঠোঁট ছোঁয়ালেও তিতা স্বাদে ফেলে দিই। মনে হয় - রাজনীতিও বুঝি সেরকম ব্যাপার।

আরো পরে, গুরুজনেরা আলাপ করেন - 'রাজনীতি দেশটা শেষ করে দিলো। ছাত্র রাজনীতি আরো খারাপ। কী হয়, ভার্সিটিগুলোয় পড়ালেখা হয়! খালি মারামারি, গোলাগুলি।'শুনে চমক লাগে। জ্বীন-পরীও ভূত-প্রেতের গল্প সত্যি হয়ে আসে। বর্গী আসার আগেই ঘুমোতে হবে। খাজনা দেয়ার দিন এখন নেই। দেশের জনপ্রিয়তম লেখকটি তখন টিভির টকশো-তে বলেন - 'স্বাধীন দেশে ছাত্র রাজনীতির দরকার নেই।' আসলেই তো! কী দরকার! আমরা এখন স্বাধীন, কার জন্যই রাজনীতি করবো।

আমি ঘুমাই, বন্ধুরা ঘুমায়। খোকা ঘুমায়। পাড়াও হয়তো জুড়ায়। ঘুমায় ইতিহাস চর্চা।এর মাঝে দেয়াল লিখন পাল্টায়। পাল্টায় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। গোলমেলে টিকটিকিও ভাষা সৈনিক হয়ে উঠে। টের পাই না, এরাই একাত্তরের কীট!আমরা তখন বিভ্রান্ত হয়ে পড়ি। স্যরি, মুক্তিযুদ্ধ আমাদের কারিকুলামে ছিল না। আমি মার্কেটিংয়ের ছাত্র, আমার বন্ধুরা ফাইন্যান্সের। কেউ বা সাহিত্যের, ভূগোলের কিংবা সায়েন্সের। ইতিহাসের পড়ুয়ারা মাথা চুলকে বলে -

জিয়াউর রহমানই তো স্বাধীনতার ঘোষক! তাই না?
আসলেই!
ধ্যাত - এগুলো তো জেনারেল নলেজ। কেনো! আমরা ক্লাস ফাইভে পড়লাম না?
রাইট। রাইট।
একাত্তরে তিরিশ লাখ মারা গিয়েছিল নাকি, আসলে ওটা হবে তিন লাখ।
কারা কারা জানি - তিন লাখকে ভুলে থ্রি-মিলিয়ন বলেছিল।
ঠিক, ঠিক। তিন লাখ।

আমরা আবার ঘুমাতে যাই। আমাদের বিবেকও ঘুমায়।
জেগে থাকে কীট প্রতঙ্গ। ওরা ধীরে ধীরে দানব হয়ে উঠে।

আমরা কচ্ছপের মতো মাথা লুকাই, সুযোগ বুঝে বের হবো।
অথচ ঐ সুযোগ আর আসে না।
আমাদের ঘুমে এবং জাগরণে তখন দানবের রাজত্ব।
আমরা হয়ে উঠি - দানব প্রজন্ম।

(হাজারদুরারী-তে প্রকাশিত)

এগিয়ে যাচ্ছে দেশ!!!

ঘটনা এক:
টিএন্ডটিতে চাকুরী করেন ফজল সাহেব। ছোট্ট একটি পোস্ট। মাসে বেতন সর্বসাকুল্যে ৫ হাজারের মতো। যখন চাকুরীতে ঢুকেছিলেন তখন কত টাকা ঘুষ দিতে হয়েছিল তা এখন আর নাই তুলি। দেশে বাবা-মা, ভাই বোন মিলিয়ে গোটা বিশ জনের পরিবার। ঢাকায় বউ বাচ্চা। তাদেরও তো বাঁচবার শখ আছে, আছে চাহিদা। ছোট খাট ফোনের লাইনের ব্যাপারে সাহায্য করে কিছু উপরি উপার্জন করতেন। অন্যায়, খুবই অন্যায়।

সরকারের পরিবর্তন হলো। দেশে লাগলো উন্নয়নের জোয়ার। বিশ বছর ধরে যে সিস্টেম নষ্ট হয়েছে একদিনে সেটা ভালো করার জোরাজুরি। ফজল সাহেবের আয় আবার সেই ৫ হাজার। ফলাফল মেট্রিক পরীক্ষার আগে ছেলের প্রাইভেট টিউশনি বন্ধ। বাজার বন্ধ হয় হয়।

তবু আমরা খুশী দেশে উন্নয়নের জোয়ার বইছে।

ঘটনা দুই:
দরিদ্র বাবার এক সন্তান বাবু। বাবা অনেক কষ্ট করে মেট্রিক পাশ করিয়েছে। ইন্টারমিডিয়েট কোন রকম ঠেলে ঠুলে একবার চেষ্টা করেছিল। ফেল করার পর আর কিছু হয়নি। এযুগে ইন্টারমিডিয়েট ফেল ছেলের কিছু হবার আশা নেই। তবু মামার কল্যানে একটি সরকারী অফিসে নামকা ওয়াস্তে পদে নিয়োজিত ছিল। পরিবারে খাওয়া পরা চলে যেত। খারাপ, খুবই খারাপ।

উন্নয়নের বেচারার চাকরী চলে গেল। হবে, সব কিছু টাইট হবে। বিশ বছরের টাইট একবারে হবে।

তবু আমরা খুশী দেশে উন্নয়নের জোয়ার বইছে।

ঘটনা তিন:
সরকারী কর্মকর্তা বজলু সাহেব দেদারসে ঘুষ খেতেন। বাড়ি, গাড়ি কি নেই করেন নি। তবু তার ছায়ায় ছিল প্রায় জনা ত্রিশেক কর্মচারী, তিন জন ড্রাইভার। ধান ছড়িয়ে থাকলে অনেকেই খেয়ে যায়। খারাপ খুব খারাপ।

উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে গেল। আজ যে রামও নেই সেই অযোধ্যাও নেই। শুধু রয়ে গেছে ত্রিশটি ক্ষুধার্ত পেট।


পাশ করে দেশের বাইরে চলে এসেছি। কোরাপ্টেড সিস্টেমে কোরাপ্টেড হবার আগেই। এ ব্যাপারে ভাগ্যবান মনে করি নিজেকে। উন্নয়নের জোয়ার দেখে আমি খুশী। মরুক শালার দুর্নীতিবাজ হাভাতেরা। তবু গরম পানির ছিটা আমার গায়েও পড়ে। কেবলই সরে যেতে চাই, পারিনা। আপনি পারেন কি?

(একই সাথে সামহোয়্যারইন ব্লগে প্রকাশিত)

Tuesday, March 13, 2007

বাংলাদেশ নিয়ে হতাশা কেন?

বাঙালি আড্ডাগুলো আমার খুবই অপছন্দের। প্রায় একই ধরণের ঘ্যান ঘ্যানে ও ঘিন ঘিনে আলাপের চল সেখানে। শুরুতে দুয়েকটা আড্ডায় আগ্রহ ভরে গিয়েছিলাম, এবং তখনকার অভিজ্ঞতা থেকে মনে মনে কান ধরেছি, বাপু হে, আর নয়। এইবার ক্ষ্যান্ত দাও।

আড্ডাগুলোর যে ব্যাপারটা আমার সবচেয়ে অপছন্দ, বাংলাদেশ প্রসঙ্গ এলেই দেখা যায় সবাই চরম হতাশাবাদী হয়ে উঠেছে। নাক কুচকে ভুরু বাঁকিয়ে কাঁধ নাড়িয়ে সবাই উদাস গলায় বলে, নাহ, এই দেশ দিয়ে কিছু হবে না।
আমি তখন গলা নরম করে জিজ্ঞেস করি, কেন হবে না বলুনতো, কি মনে হয় আপনার? কোথায় সমস্যা?
এরকম সরাসরি জিজ্ঞাসায় বক্তা সাধারণত একটু বিহবল হয়ে যান। এদিক ওদিক তাকিয়ে দুয়েকজন সমর্থক খোঁজার চেষ্টা করেন। কারণ সম্ভবত আর কোন আড্ডায় এরকম হতাশ দীর্ঘশ্বাসের পরে তাকে এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় নি। অন্য যারা দীর্ঘশ্বাস রেডি করেছিলেন, তারা সম্ভবত আমার আক্রমণাত্মক ভাবভঙ্গি দেখে সেগুলো আর বেরুতে দেন না, আটকে ফেলেন। আর মূল বক্তা তখন গলা খাঁকারি দিয়ে বলে ওঠেন, না, এই যে দেখেন, চারিদিকে সন্ত্রাস, দূর্নীতি জীবনের নিরাপত্তা নেই, এরকম হলে একটা দেশ কেমন করে উঠবে বলেন? দেখেন আমাদের পাশের দেশ সিঙাপুর, মালয়েশিয়া ওরা কত উন্নতি করে ফেললো তর তর করে...।

অন্য কোন দেশের সাথে তুলনা চলে এলেই আমার রাগ হয় খুব। সিঙাপুর বা মালয়েশিয়ার ইতিহাসের সাথে আমাদের মিল নেই। বাঙালি জাতিই একটা মিশ্র জাতি। যুগে যুগে নানাদেশের নানান রকম মানুষ সম্পদের লোভে এইখানে এসে বসতি গড়েছিলো, তখন থেকেই এই অঞ্চলের মানুষের রক্তে মিশ্রণ শুরু হয়ে গেছে। আজ এতদিন বাদে যদি তাকাই তো দেখি বাঙালি কারো সাথে কারো চেহারায় মিল নেই। একেকজনের চেহারার গঠন বা বৈশিষ্ঠ একেকরকম। এবং আমি নিশ্চিত যে বাইরের চেহারার সাথে সাথে তাদের মনের গঠনেও রয়েছে বিভিন্নতা ও বৈচিত্র! ঠিক এরকম একটা মিশ্র ইতিহাস সাথে করে নিয়ে একটা জাতিকে “এক'' হয়ে উঠতেই বিস্তর সময়ের প্রয়োজন। আমরা কি আদৌ সেই সময়টা পেয়েছি? আমার মনে হয় না।

খুব সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে অবশ্য নানা রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক ইস্যুতে আমরা একসাথে গর্জে উঠেছি ঠিক। ৫২, ৬৯, ৭১ বা ৯০- এ সবই সেসবের একেকটা বহি:প্রকাশ। এবং আমি মনে করি, ভেতর ও বাইরের এরকম বিভিন্নতা ভুলে কিছু সময়ের জন্যে এক হয়ে যাবার যে প্রবণতা- তার সুফলও আমরা হাতে নাতেই পেয়েছি- নিজেদের ভূখন্ডের স্বাধীনতা পেয়েছি আমরা, পেয়েছি নিজেদের ভাষার অধিকার। এসব ঘটনাই প্রমাণ করে না যে আমাদের “হবে''- বাংলাদেশের কিছুই হবে না নয়, বাংলাদেশের অনেক কিছুই হবে?

সঠিক নেতৃত্ব না আসার দূর্ভাগ্যও আমাদের উন্নতিতে দেরি হবার ( উন্নতি না হবার- কথাটা ভুল বলে মনে করি আমি ) পেছনের একটা বড় কারণ। আমাদের স্বভাবের মাঝেই অসততা বা দূর্ন ীতি ঢুকে বসে আছে- এরকম কোন ধারণাও ভুল। ভেজালের বিরুদ্ধে অভিযান সারা দেশের মানুষের সমর্থন পেয়েছে। দূর্ন ীতিবাজ রাজনৈতিক নেতাদের ঢালাও গ্রেফতারেও সাধারণ মানুষ খুশি। যে কোন ভালো উদ্যোগেই দেশের মানুষ নিজের সবটুকু শ্রম দেয়। অমিত নামের ছোট্ট ছেলেটির জন্যে সারা দেশের মানুষের নি:স্বার্থ ভালোবাসার কথা আমরা ভুলে যাই নি। ব্লগের এ ছোট্ট পরিসরেও যখন প্রাপ্তির কথা উঠলো, প্রায় সবাই তার সাধ্যমতোন চেষ্টা করেছে। প্রথম আলোর মঙ্গাপীড়িতদের জন্যে অথবা এসিডদগ্ধদের জন্যে যে তহবিল সেখানে প্রতিদিনই জমা হচ্ছে হাজার হাজার টাকা। এবং দেখা যাচ্ছে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই সেখানে বড় অংকের টাকা জমা দিচ্ছেন। যার মানে হলো, তাদের অনেকেই মন থেকে সেবা করার উদ্দেশ্যেই দান করছেন।
এসবই আমাদের মনের ভেতরকার ভালোত্বের প্রকাশ। যত দিন যাবে, ছোট ছোট ভালো গুণ মিলিয়ে আমরা আমাদের হৃদয়টাকে অনেক বড় করে তুলবো অবশ্যই, আমাদের বাঙালি হৃদয়ও তখন পরিচিত হবে সৎ ও দূর্ন ীতি বিরোধি হিসেবে।

কিছু সৎ নেতৃত্ব দরকার আমাদের, কিছু শক্ত আইন দরকার, সেই আইন রক্ষার জন্যে দরকার কিছু নিষ্ঠাবান প্রশাসক। এবং আমার ধারণা, এই চাওয়াগুলো আকাশকুসুম কোন কল্পনা নয়। এসবই সম্ভব। পঁয়ত্রিশ বছর গিয়েছে, জানি এটা অনেক সময়, আমরা হয়তো একটু লেট লতিফই হলাম। পঁয়ত্রিশে পারি নি, সত্তরে হোক!

আমি বরং খুব নিকট ভবিষ্যতে খুব সুন্দর একটি বাংলাদেশ দেখতে পাই। আমাদের বয়েসী যারা আছে, আমাদের সমমনা বন্ধুরা, আমি তাদের অনেকের মাঝেই দেশের জন্যে অপরিসীম ভালোবাসা দেখেছি। সৎ জীবন যাপনের অঙ্গীকার দেখেছি। আমি জানি, এরকম মানুষের সংখ্যা হয়তো এখনো অনেক কম, কিëতু সেটা একসময় বাড়বে নিশ্চয়। আমাদের এ আশাবাদী চিন্তাগুলো যদি আমরা ছড়িয়ে দিতে পারি সবার মধ্যে, যারা হতাশায় কেবলই মাথা নাড়েন, তাদের মাথাটাকে শক্ত করে চেপে ধরে যদি বলি, দেখুন, বাংলাদেশের উন্নতি হবে, খুব তাড়াতাড়িই হবে যদি আপনি মাথা নাড়ানো থামিয়ে দেশের জন্যে একটা ভালো কিছু করার সংকল্প করেন, তবেই সেটা সম্ভব।

হতাশাবাদীদের মুখে ঝাঁটার বাড়ি, আমি ভাই সারাজীবনই আমার দেশ নিয়ে আশাবাদীদের দলে। আপনি?

Monday, March 12, 2007

Rajakars of Bangladesh

This is a very interesting audio that I've found in YouTube about Rajakars in Bangladesh. Jamaate Islami of Bangladesh is a fundamentalist political group who basically collaborated with Pakistani military and fought against Bangladesh freedom fighters in 1971. This documentary in Bangla is found to be a very comprehensive 30 minute long that explains all aspects of Rajakars: war criminals in Bangladesh. Here is the audio file in You Tube:


Saturday, March 10, 2007

সামরিক আইন কি অত্যাসন্ন

বাংলাদেশে সামরিক আইন কি অত্যাসন্ন? বিষয়টি নিয়ে একজন পর্যবেক্ষকের লেখার কিছু প্রশ্ন তুলে দেওয়া হয়েছে:
(১) দুর্নীতিপরায়ণদের ১০০ জনের তালিকার মধ্যে সামরিক বাহিনীর কোন সদস্যের নাম নেই।
(২) সকল ধরণের রাজনৈতিক কর্মসূচীর নিষিদ্ধ ঘোষণা। এমনকি ঘরোয়া রাজনীতির উপরও নিষেধাজ্ঞা।
(৩) ব্রিগেডিয়ার সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির সুনির্দিস্ট অভিযোগ ছিল। তাকে নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ দান।
(৪) ডিটেনশনগুলো জামিন অযোগ্য বলে ঘোষণা দেওয়া।
(৫) নির্বাচন কমিশনের কাজে কোন অগ্রগতি না হওয়া।
(৬) দুর্নীতির উচ্চ পর্যায়ের কমিটি সম্পূর্ণভাবে সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রনে রাখা।
(৭) জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল গঠন-জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোন সংকট কি দেখা দিয়েছে? তারপরেও এর জন্য তোড়জোড় সৃস্টি করার কারণ কি?

দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে যেসব কর্মসূচী গ্রহণ করা হচ্ছে তা জনগণ আন্তরিকভাবে সমর্থন দিচ্ছে। কিন্তু প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে রাস্ট্রক্ষমতা সামরিক বাহিনীর তত্ত্বাবধানে নেওয়া কোন শুভ লক্ষণ নয়। সময়মতো জাগ্রত জনতা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করবে না।

Thursday, March 8, 2007

শোক সংবাদ : দুষ্টু রাজপুত্তুর ধরা পড়িয়াছে

সারা পৃথিবীতে আপামর বাঙালীর মাঝে শোকের মাতম পড়িয়া গিয়াছে। কেহ কেহ রাস্তায় নামিয়া বুক-পিঠ চাপরাইয়া “হায় আজপুত্তুর... হায় আজপুত্তুর“ বলিয়া মহরমের ন্যায় শোক মিছিল করিতে নামিয়া গিয়াছে। কাহারো কাহারো আখি জলে রাস্তা প্লাবিত হইয়া জনজীবনে ধ্বস নামিয়া গিয়াছে। সবার কথা একটাই- “কামঠা কি ঠিক হইলে বাহে“?

আজপুত্তুরের বেলায় না হয় ঠিক হয় নাই মাগার তাহার সহিত জোটে জোট লাগানো দলের শিক্ষার্থী সংগঠনের সভাসদের পদ অধিকারী দুগ্ধে ধৌত তাহের ছাহেব (সালাম)কে কোন বেয়াক্কেল আটক করিয়াছে উহা জানিতে বড়ই মন চাহিতেছে। সর্বশেষ খবরে প্রকাশ পাইয়াছে, এই ঘটনায় ও সর্ব সাধারন ক্রন্দন করিতে করিতে মূর্ছা গিয়াছেন।

আপনারা যারা উপরিউক্ত সংবাদদ্বয়ে মর্মাহত, বিমর্ষ হইয়া পড়িয়াছেন - উহারা একেএকে, দলেদলে, সদলবলে, আস্তে কইরা একটা টোকা মাইরা যাইয়েন।

ভাইয়েরা আমার, আমি দু:খের জ্বালায় আর লেখতে পারতাছি না, আঁখির জলের বানের কারনে কিছুই দৃশ্যম করিতে পারিতেছি না বিধায় এইখানেই লেখাখানির ইতি টানিতে হইলো।

ভবদীয়,
শোক সন্তপ্ত এক ভক্ত