Sunday, February 4, 2007

অপারেশন ক্লীনহার্ট

২০০১ এর নির্বাচনের পরের ঘটনা। রাজশাহী ক্যান্টনমেন্টের জলপাই রঙের দোস্ত ঢাকায় আসছে। মুলাকাত স্থল কলাবাগানের হেলভেশিয়া। রাজেন্দ্রপুরের আরেক জলপাই চিঙড়ি মাছের মাথার মতো জলপাই জিপে হাজির। সাথের আর্কিটেক্ট পড়ুয়া দোস্ত ছাড়া বাকি তিনজনই আমরা মাশাল্লাহ তালপাতার সেপাই। তবে বুয়েটের ভাবি আর্কিটেক্ট চান্দুরে গালিভারের বংশধর বলে ঠিক চালিয়ে দেয়া যায়।

আমি ব্লাডি সিভিলিয়ান হলেও তৎকালীন লেফটেন্যান্ট চাঙ্কি দুজনের ভাবসাবই আলাদা ছিলো অধঃস্থনদের কাছে। মি. রাজেন্দ্রপুর যেভাবে নামলো গাড়ি থেকে, ভয়ই পেয়ে গিয়েছিলাম। আর্কিটেক্টরে বলি, দোস্ত দিমু নাকি দৌড়?

আমি আগেই বলেছি জলপাই রঙরে আমি বড়ই সমীহ করে চলি। কে জানে কোনদিন, কোনদিক দিয়ে ক্লীন হার্টের নামে আমাকেই দুনিয়া থেকে ক্লীন করে দেয় ব্যাটারা। ভয়েডরে থাকাই স্বাভাবিক। নিঃশ্বাসের নাই বিশ্বাস। এক মিনিটের নাই ভরসা গাইতে গিয়া ডেখা গেলো ফিরোজ সাঁই-এর মতো আমিও নাই!

হেলভেশিয়ায় বসার পর কয়েক দফা বার্গার আর কোলা খতমের পর, কয়েক প্রস্ত কুশলাদি আদান-প্রদানের পর কথায় কথায় মি. রাজশাহী তাঁর গল্প বলা ধরলো।

স্থানীয় কোন এক চেয়ারম্যানের পোলার বিরুদ্ধে (লোকাল) মাস্তানীর অভিযোগ। এমনকি বাপ নিজেও পোলার অত্যাচারে অতিষ্ঠ। গ্রামের কোন এক লোকের সুন্দরী বউকে জোর করে তুলে নিয়ে গেছে। ওকে ধরে আনা হয়েছে, টীমের ইনচার্জ ছিলো আমার শান্ত-শিষ্ট দোস্তটা। গুঁতালেও যে টু শব্দও সহজে বের করতে চায় না, সে।

এ পর্যায়ে আমি হাসি। থাম শালা, তুই একটা মিশনের চার্জ নিয়া গেছস, তাও মাস্তান ধরতে? ব্যাটা মুখ গম্ভীর করে বলে, তুই জানোস এই আমিই আমাদের ব্যাচে 'সোর্ড অফ অনার' পাইছি!

আর্কিটেক্ট আর মি. রাজেন্দ্রপুরের ভরসায় মেনে নেই। আবারো শুরু হয় গল্প।

ধরে এনে তাকে জিজ্ঞেস করা হলো-
: তুই অমুকের (নামটা আমার মনে নেই) বউরে তুইলা আনছস?
- জ্বি না স্যার...

: কথা শেষ হবার আগেই থাপ্পর। মিথ্যা কথা কস ক্যা.... ঠিক কইরা ক।
- জ্বি স্যার আনছি।

: (বড়দের কাজ) করছস?
- না স্যার আমি ফুলের টোকাটাও দেই নাই...

: (চরম গালি) পোলা, তাইলে কি পুজা দেওয়ার লাইগা আনছো? (আবার থাপ্পর)
- জ্বি স্যার করছি...।

: হুমম, কয়বার?
- স্যার একবার...

: (এইবার হাঁটুর গিঁঠে লাথি) একবারের লাইগা এতো কিছু করলি, আর আমারেও কষ্ট দিলি। তোরে ধরতে আমার কষ্ট হয় নাই?
- স্যার দুইবার ....

: (আবারো বিচ্ছিরি গালি) পোলা, ঠিক কইরা ক, কয়বার.... (এবার ধমাধম মার)

এবার ঐ ছেলে কাঁদতে কাঁদতে বলে, স্যার আপনে যতোবার কন ততবারই করছি, তাও আমারে ছাইড়া দেন স্যার। আর জীবনে কোনদিন কোন মাইয়া মাইনষের দিকে ফিরা তাকামু না। ও আমার মা লাগে...।

এইবার আবার শুরু হয় মার। (গালি দিয়ে) তুই তো জাহান্নামের কীট রে, তুই তোর মার লগে এই করস?

-----------

1 comment:

Anonymous said...

হাহাহা। তারপর কি করলো?বীচিদুইটা কাইটা রাখা দরকার ছিলো।