স্বাধীনতার নিশ্বাস খেতে দাও, ভাতের আগে, নইলে ভাতের সংস্থান হচ্ছে না। ফুটপথের হকার, বস্তিবাসী প্রান্তিক জনগোষ্টী লাপাত্তা হয়েছে। ওরা কোথায় গিয়েছে! স্বাধীনতা হরণের সাথে এভাবে খাদ্যের সংস্থান অনিশ্চিত হয়ে পড়ে, জঠরের জ্বালা নিবৃত্ত করা নিশ্বাসকে বন্দী রেখে সম্ভব নয়! কেন সরিয়ে নিলে, কোথায় আমার কর্মসংস্থান? এ বক্তব্য সেনসরড! মানে অধিকার এখন সবার আগে, চিৎকার করে বলার অধিকার, ভাত দে হারামজাদা!
যে মইনুল হোসেন ৭৫ এ বাকশালের প্রতিবাদ করেছিলেন জনগণের বাক স্বাধীনতার কথা বলে আজ তিনি সে কথা বলার অধিকার হরণের পক্ষে সাফাই গাইছেন। এখন নিশ্চিত সেটা ছিল তার বঙ্গবন্ধুকে প্রতিবাদ, জনগণের পক্ষে দাড়ানোর স্টান্ডবাজি নয়। অতি সহজ তাই প্রভূর কথা শোনা, যা বলেন সে পক্ষই সই। জবাবদিহীতাবিহীন কোন শাষক পৃথিবীর একটা মানুষকেও কোন উপকার পৌছুতে পারে না, কারণ শাষণ যন্ত্র বড় অদ্ভুত নিয়মে ঘোরে, পেছনে জনগণের মনোনয়ন নেই এ বোধটুকু সে শাষকদের অবোধ করে, অকার্যকর করে। জনগণের শক্তি তাদের কাজের শক্তি দেয় যা এ জবাবদিহীতাবিহীন সরকার কখনও পেতে পারে না।
বিএনপি সরকারের শেষ দিন থেকে ডঃ ফখরুদ্দিন আহমেদের সরকার গঠনের মাঝখানের সময়টুকুতে রাজনৈতিক দলগুলো ভজঘট লাগিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু জনগণের প্রতিনিধিত্ব আর জনগণের আশা নিরাশার কথাগুলো তারা জানতে পারছিল, প্রতিনিয়ত হতে পারছিল জনগণের দাবীর প্রশ্নে নৈকট্যবর্তী। ক্ষমা-ঘেন্নার এক নিক্তিতে জনগণকে তারা উপস্থাপনের সুযোগ পাচ্ছিল। ক্রমশঃ মতনৈক্য থেকে একসময় বাংলাদেশের নিজস্ব একটা সমাধানের রাস্তায় বের হবার দারপ্রান্তে উপনীত হচ্ছিল। জনগণের কাছে জবাবদিহীতার মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছিল। কেউ হারাচ্ছিল জনসমর্থন আর তা শুধরে নেয়ার চেষ্টা করছিল জনগণের কাছাকাছি পৌছে। রাজনৈতিক দলগুলো হয়ে উঠছিল জনগণের সত্যিকারের মুখপত্র। একটা অসীম সম্ভাবনার দারপ্রান্তে দাড়িয়ে যখন আমাদের ভেতর স্বাধীন সার্বভৌম শক্তির উন্মেষ হচ্ছিল, তখন সেখানে গুটিকতেক সভ্য (!) মানুষের সমাজ ভাবনার শ্রেষ্ঠ তকমা লাগানো সিদ্ধান্ত দেশকে পিছিয়ে দিল একযুগ। জনগণ কেমন জীবন চায় তার সাথে ইন্টারএ্যাকশন ছাড়া এখন জীবন বিধান, খাদ্য-বস্রের সংস্থান, ঘুস দূর্নীতি রোধ করে এক মহৎ দৃষ্টান্ত নির্মাণের স্বপ্ন বড় বেশী আরোপিত মনে হচ্ছে। জনগণের মুখের ভাষা কেড়ে নিয়ে ঘরে পেটপুড়ে খেয়ে বসে থাকবে এমন করে মানুষকে কল্পনা করার মত চিন্তা বড় বেশী মূর্খামী মনে হচ্ছে। প্রবাহমান জীবন দর্শন থেকে মনে হচ্ছে ছিটকে পরা একটা গ্রহে হতে যাচ্ছে আবার বাঙালীর জন্ম দিনের অনুষ্ঠান! নাক কেঁটে হেপি বার্থডে ফুল!
8 comments:
চমতকার লেখা। ভাল লাগল অ্যানালাইসিস। ধন্যবাদ।
এটা আসলে ভাল একটা অলটারনেটিভ হতে পারে। এস এম মাহবুব মোর্শেদ হয়তো ভাল কিছু পরামর্শ দিতে পারবে।
তোফাজ্জল হসেন তার ছেলেকে তৈরীই করছিলেন শেখ মুজিবের এন্টি হিসেবে। তার উদ্দেশ্য ছিলো মইনুল হোসেন হবে সোহরাওয়ার্দী কিংবা কায়দে আজম। সেই ঘটনা থেকেই বাকশালের বিরোধিতা। স্বাধীনতার ৩৫ বছর পর হাতে ক্ষমতা পেয়েছে মইনুল হোসেন। বুঝাই যায় এখন যা হচ্ছে তা গত ৩৫ টা বছরেরই সাধনার ফল।
D. G.
সহমত
যে অবস্থাটা এখন চলছে আমি হলফ করে বলতে পারি সেটা অনেকে চেয়েছিলেন বলেই এসেছে। এবং এখন অনেকে কিন্তু খুশীও।
আজকে আবার সরকারী ব্যাখ্যা এসেছে এই আইন খবরের কাগজের স্বাধীনতা হরন করবে না, তার পরপর আরেকটা খবর কিভাবে এর মিসইউজ হচ্ছে। (প্রথম আলো দ্রষ্টব্য) তবে আরো মাসখানেক সময় লাগবে থলের বেড়াল বেরোতে। আর যদি গদির আরাম ভালো লেগে যায় সরকারের তাহলে কি ঘটবে সেটা সহজেই অনুমেয়।
মামার নাম দেখি কেউ মুখেই আনে না !
মামার নাম নিয়া শেষমেষ আবার যদি কোন বিপদে পড়ি? সাধক, চামড়া বাচাও। দেখস ওসি ব্যাটার কি অবস্থা? হা হা
আমি পেট ভরে নিশ্বাস নিতে চাই না, বাচার জন্য যতটুকু নিশ্বাস নেয়া দরকার ততটুকু দিলেই আমি খুশী।
Post a Comment