শতাধিক শিক্ষক রাজনীতিক ও ছাত্র নেতা গোয়েন্দা নজরে
Source:দৈনিক ইত্তেফাক, August 27, 2007
Bangladesh daily reports that hundreds of students, teachers and politicians are under the surveillance of the intelligence in Bangladesh. This story ridicules Army's intelligence to understand the public sentiment that was sparked by army's arrogance and insensitivity to public. Read this story:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০, ২১ ও ২২ আগস্টের সংঘটিত ঘটনাটি পরিকল্পিত ঘটনা বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়। এই ঘটনার রাজনৈতিক ফায়দা লুটার, মদদদাতা ও ছাত্র-ছাত্রীদের উস্কানি দিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগে উৎসাহিত করার জন্য শিক্ষক, ছাত্র নেতা ও কতিপয় রাজনৈতিক নেতা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ জড়িত থাকার তথ্যও গোয়েন্দা সংস্থা পেয়েছে। ৪টি গোয়েন্দা সংস্থা এই বিষয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান ও মদদদাতাদের সনাক্ত করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে মাঠে নেমেছে। কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক ও সন্ত্রাসীদের এক গডফাদারের এই ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রে এই পর্যন্ত শতাধিক শিক্ষক-ছাত্র নেতা, রাজনৈতিক ও দুর্নীতির কোটিপতিরা জড়িত থাকার প্রাথমিকভাবে সত্যতা পেয়েছে। তাদের ব্যাপারে ব্যাপকভাবে গোয়েন্দা সংস্থা অনুসন্ধান চালাচ্ছে। গতকাল রবিবার পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন শিক্ষক ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আজিজুল বারি হেলালকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনার দিন ছাত্রদল নেতা হেলাল খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিস্থিতি নিয়ে টেলিফোনে আলাপ করে আন্দোলন বেগবান করার জন্য নির্দেশনা দেন। উক্ত তিনজনকে নিয়ে গতকাল পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে ২৫ জন।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, বেসরকারি দুইটি টিভি চ্যানেল, ছাত্রদল-ছাত্রলীগ ও বেশ কয়েকজন শিক্ষক ও একজন ব্যাংকার জড়িত থাকার তথ্য পায়। গোয়েন্দাদের প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, বেসরকারি টিভি চ্যানেলের সিএসবি কর্ণধার ও সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে ফজলুল কাদের চৌধুরী, একুশে টিভির চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম, র্যাংগস গ্রুপের কর্ণধার আবদুর রউফ চৌধুরী, ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভীন হক সিকদারসহ অনেক ছাত্রদল নেতা জড়িত ছিলেন। ২০ আগস্ট বিকেল সোয়া ২টায় ফুটবল খেলা দেখাকে কেন্দ্র করে সাধারণ ছাত্রের সঙ্গে নিরাপত্তা কর্মীর তর্কবিতর্ক হয়। পরে শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা তাৎক্ষণিকভাবে ভারপ্রাপ্ত ভিসির নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেন। ঐ সময় ছাত্ররা দাবি করে, সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার ও অভিযুক্ত নিরাপত্তা সদস্যদের শাস্তি দাবি ও প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা। এতে কিছুক্ষণ পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যায়। কিন্তু এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও ভোর ৪টা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলে। শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয় দেশব্যাপী শিক্ষাঙ্গনে ছড়িয়ে পড়ে এই সংঘর্ষ। ৪টি গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের মতে এটি পূর্বপরিকল্পিত ঘটনা।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, এক শিল্পপতি ও তার অফিসের বেশ কিছু তরুণ শুধু টাকার বান্ডিল হামলাকারী ছাত্র ও তাদের নেতার নিকট বিতরণ করে। মবিল ও কেরোসিন তেল এফ রহমান হলের ভিতরে মওজুদ করে রেখেছিল। হামলার সময় এগুলো বোতলে করে ব্যবহার করে। ক্যান্টিন বয় ও বহিরাগত ছেলেদের ছিল এই দায়িত্ব। গোয়েন্দা কর্মকর্তা এই সকল বিষয়ে তথ্য পেয়ে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযানে নেমেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সহিংস ঘটনায় গতকাল পর্যন্ত ১১টি থানায় ৩৫টি মামলা হয়েছে। আসামীদের সংখ্যা ৭৬ হাজার ১০৬ জন। এরা সবাই অজ্ঞাত। এছাড়া ঢাকার বাইরে ৬টি মামলা হয়েছে।
সিএসবি’র বক্তব্য
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সিএসবির পক্ষ থেকে সম্পাদনা বিভাগের পরিচালক নিয়াজ মোর্শেদ জানান, ফজলুল কাদের চৌধুরী গত প্রায় দেড়মাস ধরে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। দেশের বাইরে অবস্থানকালীন সময়ে এ ধরনের ঘটনায় কিভাবে ইন্ধন দেয়া যায় তা আমাদের কাছে বোধগম্য নয়।
ইটিভির বক্তব্য
ইটিভির চেয়ারম্যান আবদুস সালাম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ঘটনার সংবাদ প্রচার সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন শিক্ষক তো দূরের কথা আমার সঙ্গে কারো কোনরকম আলোচনা হয়নি। তিনি বলেন, আমার প্রতিষ্ঠান একুশে টেলিভিশন সম্প্রচারের জন্য আদালতের রায় বাস্তবায়ন করেছে বর্তমান নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার। এ সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্রে একুশে টেলিভিশনকে জড়ানো শুধু উদ্ভটই নয়, হাস্যকরও বটে।
No comments:
Post a Comment